November 21, 2024, 8:12 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
কুষ্টিযার কুমারখালী উপজেলার পদ্মা নদীতে গভীর রাতে আসামী ধরতে গিয়ে হামলার শিকার হয়ে নদীতে পড়ে গিয়ে পুলিশের দুই এএস আই নিখোঁজ হয়েছেন। পুলিশের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
তবে স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে গভীর রাতে পুলিশ সদস্যরা পদ্মায় অবৈধভাবে ইলিশ মাছ শিকারীদের কাছ থেকে ইলিশ মাছ ‘লটু’ করতে গিয়ে হামরার শিকার হন। এসময় পুলিশের সাথে দুইজন স্থানীয় ইউটি সদস্যও ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার ভোররাত ৪টার দিকে একটি নৌকায় কুমারখালী থানার ছয়জন পুলিশকে নিয়ে পদ্মা নদীতে যান। তাদেও সাথে ছিলেন স্থানীয় কয়া ইউনি পরিষদের দুই সদস্য ছানোয়ার হোসেন ও আনোয়ার আলী।
পুুলিশ অবৈধভাবে নদীতে জাল ফেলে মাছ নিধন করা জেলেদেও একটি নৌকাকে চ্যালেনজ করে। পুলিশের নৌকাটি জেলেদের দিকে এগিয়ে গেলে ঐ নৌকার জেলেরা পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে মারধর করে।
এ সময় নৌকায় থাকা এএসআই সদরুল আলম ও এএসআই মুকুল হোসেন নদীতে পড়ে যায়। এরপর থেকেই তারা নিখোঁজ রয়েছেন।
এদিকে, কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ কান্তি নাথ স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে কুমারখালী থানার এসআই নজরুল ইসলাম এর নেতৃত্বে এএসআই রিপন হোসেন, এএসআই সদরুল আলম, এএসআই মিজানুর রহমান, এএসআই মুকুল হোসেন এবং কনস্টেবল শ্রী অমল কুমার একটি ওয়ারেন্ট তামিলের জন্য কুমারখালী থানার ১১ নং চরসাদীপুর ইউনিয়নের উদ্দেশ্যে রওনা করেন। উপজেলার কয়া ইউনিয়নের কালোয়া ঘাট থেকে চরসাদীপুর ইউনিয়নে ভাড়া করা নৌকা যোগে যাওয়ার পথে পদ্মা নদী পার হওয়ার সময় মাঝপথে পৌঁছালে অজ্ঞাতনামা ২/৩ টি নৌকা দ্রুত গতিতে তাদের নৌকার দিকে আসতে থাকলে তারা সিগন্যাল দিয়ে নৌকাগুলোকে থামানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু অজ্ঞাতনামা নৌকাগুলো তাদের নৌকা না থামিয়ে পুলিশের নৌকার কাছে এসে সজোরে ধাক্কা দেয় এবং তাদের কাছে থাকা দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র দিয়ে পুলিশের উপর আক্রমন করে। ফলে পুলিশের নৌকা পানিতে ডুবে যায়। অজ্ঞাতনামা ২/৩ টি নৌকাতে ২০/২৫ জন লোক ছিল। তাদের আক্রমনের ফলে পুলিশের এসআই নজরুল ইসলামসহ সঙ্গীয় অফিসার ফোর্স আহত হয়। পরবর্তীতে পুলিশের চিৎকারে পার্শ্ববর্তী ১টি নৌকা এসে পুলিশের ৪ জনকে উদ্ধার করে। বাকী ২জন এএসআই সদরুল আলম ও এএসআই মুকুল হোসেনকে এখনও পর্যন্ত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
সকাল থেকেই ঘটনাস্থলে জেলা পুলিশ, নৌ পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিস এর ডুবুরি কর্তৃক উদ্ধার অভিযান পরিচালনা অব্যাহত আছে।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানিয়েছেন,ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা চললেও পদ্মা নদীতে প্রতিনিয়ত অবৈধভাবে মাছ শিকার করছে জেলেরা। ওই এলাকায় জেলেদের প্রধান ইয়ারুল। পদ্মায় তার নেতৃত্বে একটি বাহিনীও আছে। সোমবার ভোরে স্থানীয় ইউপি সদস্যদের সহযোগিতায় কয়েকজন পুলিশ নৌকা নিয়ে পদ্মা নদীতে যায়। এ সময় তারা অভিযানের নামে জেলেদের মাছ লুটে নেওয়ার চেষ্টা করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বেশ কয়েকটি নৌকায় ১৫ থেকে ২০জন তাদের উপর হামলা চালায়।
এসময় হামলাকারীদের মুখে হেলমেট ছিল বলে জানা গেছে।
দুইজন ইউপি সদস্যের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
কুমারখালীর সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহমাদুল হাসান বলেন,রাতে মৎস্য অভিযান ছিল না। পদ্মায় পুলিশ কেন গেছে তা জানি না।
কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) পলাশ কান্তি নাথ জানান, পুরো বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করে দেখছে। ঘটনাস্থলে জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান রয়েছেন বলে জানান এই কর্মকর্তা।
Leave a Reply